Home » জেলার খবর » ফের নতুন ভাবে শুরু হতে চলেছে লোবা এলাকার খোলামুখ কয়লা খনির কাজ : ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত

ফের নতুন ভাবে শুরু হতে চলেছে লোবা এলাকার খোলামুখ কয়লা খনির কাজ : ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত

বীরভূম ৪ জুলাইঃ- লোবার খোলা মুখ কয়লা খনি শুরু করতে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হল বীরভূমের সিউড়ির জেলা পরিষদে। উপস্থিত ছিলেন কোল ব্লকের বরাত পাওয়া ডিভিসি কর্তি পক্ষ, জেলা প্রশাসন এবং কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সদস্যেরা।
ফের শুরু হল লোবার খাগরা জয়দেব খোলা মুখ কয়লা খনির প্রক্রিয়া। লোবাতে কৃষি জমি রক্ষা কমিটির আন্দোলনের পর গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তারাই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে কয়লা খনি করার জন্য আবেদন জানায়। মঙ্গলবার ফের সেই প্রক্রিয়া শুরু হল। এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ডিভিসি বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কে দিয়ে ওই প্রস্তাবিত খনি এলাকার সামাজিক নিরীক্ষণ করবে। এর জন্য ওই এলাকায় একটি ক্যাম্প অফিস করা হবে অতি সত্বর। পাশাপাশি সেই নিরীক্ষণ কাজ শেষের পর এলাকার জমি মালিকদের সাথে আলোচনা করে পুনর্বাসন এর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই দিনের বোঠকে উপস্থিত ছিলেন ডিভিসির আধিকারিক সুধীর মুখার্জী, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা শাসক পি মোহন গান্ধী, কৃষি জমি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে ফেলারাম মন্ডল, জয়দীপ মজুমদার সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা।
বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের বিস্তির্ন এলাকা জুড়ে লোবা পঞ্চায়েত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাটির নিচে রয়েছে উন্নতমানে কয়লা। কিন্তু সেই কয়লা উত্তোলন করে সেখানে শিল্পের জন্য আগেও উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সেখানে বিশেষ কারনে জমি জটের কারনে আটকে গিয়েছিল সেই কয়লা শিল্প। ফলে সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল বেঙ্গল এমটা। তবে এমটা সেখান থেকে সরে আসার সময় একটি মাটি কাটার মেশিন সেখানে ফেলে আসে। সেই মেশিনটি উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছিল ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর। ওই দিন গ্রামবাসীরা মারমুখি হয়ে উঠলে তাদের উপর পুলিশ গুলিও চালিয়েছিল। ঘটনায় পুলিশ ও সাধারন মানুষ মিলিয়ে প্রায় জনা কুড়ি জখম হয়েছিল। ঘটনায় সেই ঘটনার পর থেকে জমি জটের কারনে থমকে গেছিল সেখানকার কয়লা শিল্প। কিন্তু বিগত বছরে গ্রামবাসীরা তাদের মানসিকতার বদলের ফলে এবার শিল্পের জন্য জমি দিতে ইচ্ছুক বলে ঘোষনা করেন। তারা মুখ্যমন্ত্রী কাছে শিল্পের জন্য দরবার করেন। কৃষি জমি রক্ষা কমিটি গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জমি দিয়ে শিল্পের দাবী জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবারের জন্য একটি গন স্বাক্ষর কর্মসূচী করে।
২০১১ সালের পর থেকেই লোবা এলাকায় উন্মুক্ত কয়লা খনি করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে দায়িত্ব দেওয়া হয় বেঙ্গল এমটাকে কোম্পানীকে। সেই মোতাবেক এমটার তরফে জমি অধিগ্রহণের কাজও শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু মানুষ সেখানে জমি দিতে না চাওয়ায় থমকে যায় খনির কাজ। সরকারি রিপোর্ট মোতাবেক এলাকায় প্রায় ৩৩৫৩ একর জমিতে রয়েছে কয়লা। সেই মতো কয়লা খনি করতে এই গোটা পরিমাণ জমিই প্রয়োজন ছিল। কিন্তু দালাল চক্রের মধ্যস্থতার কারনে গ্রামবাসীরা তাদের জমি দিতে নারাজ হয়। কারন অভিযোগ তারা জমির সঠিক মূল্য পাচ্ছিল না বলে অভিযোগ। তাই তারা জমি না দিয়ে জমি রক্ষার আন্দোলনে নামে। তৈরী হয় লোবা কৃষি জমি রক্ষা কমিটি।
কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সম্পাদক জয়দীপ মজুমদার আমরা চাই সঠিক পুনর্বাসন দিয়ে খনি হোক। ডিভিসির আধিকারিক সুধীর মুখার্জী বলেন, সামাজিক নিরীক্ষণের পর পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ফের নতুন ভাবে শুরু হতে চলেছে লোবা এলাকার খোলামুখ কয়লা খনির কাজ। এদিন ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করা হয়েছে।
তথ্যঃ কৌশিক সালুই
[uam_ad id=”3726″]

Comments