Home » জেলার খবর » চিকিত্‍সকের ভূমিকায় সিভিক ভলান্টিয়ার

চিকিত্‍সকের ভূমিকায় সিভিক ভলান্টিয়ার

রুগ্ন হাসপাতালের ভগ্নপ্রায় দশা। নেই এর তালিকা এখানে দীর্ঘ। পর্যাপ্ত চিকিত্‍সক নেই, নেই পর্যাপ্ত শয্যাও। – এটা খবর নয়। সাদা অ্যাপ্রোন পরে রোগীর প্রেসার মাপছেন যিনি তিনি চিকিত্‍সক নন। সিভিক ভলানটিয়ার! শুক্রবারও এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হয়েছে।- খবর এটাই।

ঘটনাস্থল, বীরভূমের খয়রাশোলের লোকপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এলাকার ৭টি গ্রামের প্রায় ৪হাজার মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল। দীর্ঘ দিন ধরে ১জন চিকিত্‍সক ও ১ জন ফারমাসিস্ট দিয়েই চলেছে গ্রামীণ এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র। অভিযোগ, তাঁরাও নিয়মিত আসেন না।

অগত্যা, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই মহিলা সিভিক ভলানটিয়ারই গ্রামবাসীর অন্যতম ‘ত্রাতা’!

এলাকায় চিকিত্‍সা পরিষেবার স্বার্থে ১৯৯৮ সালে পথ চলা শুরু এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। সময়ের সঙ্গে অবহেলায়, অনাদারে জীর্ণ থেকে জীর্নতর হাল হয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। দরজা জানলা নেই।

ঠিক মতো বিদ্যুত্‍ পরিষেবা নেই। নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ শয্যা। গত বছর বর্ষার সময় একটি শাল গাছ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির উপর ভেঙে পড়ে। আজও সেটি সরানো হয়নি।

অগত্যা, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপরেই বিপজ্জনকভাবে পড়ে রয়েছে সেটি। ফলে প্রতি মুহূর্তে ভবন ভেঙে পড়ার আশঙ্কা নিয়েই চলছে চিকিত্‍সা!

ধারে কাছে আর কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় এখানে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ রোগীরক ভিড় হয়। স্বভাবতই, রোগীর সংখ্যাধিক্যে হিমশিম খাচ্ছিলেন চিকিত্‍সক ও ফারমাসিস্ট। তখন রোগীর নাম লেখানো, ব্লাডপেসার মাপা এই সব কাজ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাহারায় থাকা মহিলা সিভিক ভলানটিয়ারদের শিখিয়ে দেওয়া হয়।

এখন তাঁরা সিরিঞ্জে করে রোগীদের রক্ত সংগ্রহও করেন।

ঘটনায় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে চিকিত্‍সকদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ থাকলেও তাঁরা তা খুব একটা প্রকাশ করতে পারেন না। কেন? বাসিন্দাদের কথায়, ”নাই মামার চেয়ে কানা মাময় ভাল। চিকিত্‍সক তো অনিয়মিত আসেন।

ফলে অসময়ে এই সিভিক ভলানটিয়াররাই আমাদের একমাত্র ভরসা! অভিযোগ জানাতে গেলে পাছে টার্গেট হয়ে যায়, তাই মুখ বুজে থাকা।”

লোকপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ প্রসূন কুমার দাসের অবশ্য সাফাই, ”এখানে প্রচুর রোগীর চাপ। ঠিকভাবে পরিষেবা দিতে পারা যায় না। তাই বাধ্য হয়ে সিভিক ভলানটিয়ারদের চিকিত্‍সার কিছুটা কাজ শিখিয়ে ফেলেছি।” এভাবে অনভিজ্ঞকে দিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা টেনে নিয়ে যায় কি না, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠছে।
ভিডিও ও তথ্যঃ খান আরশাদ

-বিজ্ঞাপন-
[uam_ad id=”3726″]

Comments