Home » জেলার খবর » সতর্ক হোন, সোশ্যাল নেটওয়ার্কে উস্কানিমূলক পোস্ট থেকে, গ্রেফতার ১

সতর্ক হোন, সোশ্যাল নেটওয়ার্কে উস্কানিমূলক পোস্ট থেকে, গ্রেফতার ১

এবার ফেসবুকে উসকানিমূলক মন্তব্য ও ছবি এবং মুখ্যমন্ত্রীর নামে অশ্লীল মন্তব্য করার অভিযোগ উঠলো। এই ধরনের বিদ্বেষ ও কুৎসা ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল এক বিজেপি নেতাকে। অভিযুক্ত তরুণ সেনগুপ্ত আসানসোল বিজেপির আইটি সেলের সম্পাদক। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হয় বীরভূমের সিউড়ি আদালতে। সিআইডি আদালতের কাছে ১০ দিনের হেফাজতের জন্য আবেদন করে। সিউড়ি আদালতের বিচারক প্রকাশ চন্দ্র বর্মন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আট দিন সিআইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৭ এপ্রিল আসানসোল বিজেপি আইটি সেলের সম্পাদক তরুণ সেনগুপ্ত ফেসবুকে একটি উস্কানি মূলক মন্তব্য এবং একটি ভিডিও পোষ্ট করেন। তাতে তিনি একটি ভিডিও ও মন্তব্য পোষ্ট করেন যে বীরভূম জেলা পাকিস্থান বা বাংলাদেশের অংশ। বীরভূমের পুলিশ সুপার নিসাদ পারভেজ এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারহাত আব্বাস এক হনুমান ভক্ত হিন্দু যুবককে মারধর করছেন। হনুমান জয়ন্তীর মিছিল হয়েছিল সিউড়িতে তার ঘটনা। তিনি উত্তর প্রদেশের একটি পুলিশের মারধরের ভিডিও পোষ্ট করেন। সি আই ডি তদন্ত করে দেখে যে যে ভিডিও টি আপলোড করা হয়েছে সিউড়ির ঘটনা হিসাবে সেই আগেই ইউ টিউবে ২০১৪,২০১৫ এবং ২০১৬ সালে আপলোড হয়েছে। সেই ভিডিও টিকে নিয়ে সিউড়ির হনুমান জয়ন্ত্রীর মিছিলে দুই পুলিশ আধিকারিকের মারধোরের বলে লেখা হয়েছে। যদিও ওই দুই পুলিশ আধিকারিক অনেক দিন আগেই এই জেলা থেকে বদলি হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি মুখ্য মন্ত্রীর ছবি দিয়ে অশ্লীল মন্তব্য লেখা হয়েছে। এই অভিযোগে গত ২৫/৪/২০১৭ সিউড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সিউড়ি পুলিশের এসওজি ওসি অরিন্দম চক্রবর্তি। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে সিআইডি গতকাল তরুণ বাবুকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে সিআইডির তরফে মোট পাচটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। সিআইডি আইটি সেলের আইনজীবি বিভাস চ্যাটার্জি জানিয়েছেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যেসব ধারা গুলি দেওয়া হয়েছে সেগুলি হল ভারতীয় দন্ডবিধির ১৫৩/এ(দুটি সম্প্রদায়ের বিবাদ লাগানো), ২৫৯/এ (কোনও এক সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনের জন্য মন্তব্য ছড়িয়ে দেওয়া), ৫০৫(সমাজে অশান্তি সৃষ্টিকারি সমালোচনা), ৫০৪/২ (মিথ্যা কোনও কিছু ছড়ানো যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি নষ্ট করে) এবং আই টি অ্যাক্টে ৬৬(এফ)(১)(এ)(১১১) ধারায় (এমন কিছু মন্তব্য করা যা সন্ত্রাস বাদকে প্রশ্রয় দেওয়া)। অভিজুক্তের বাজেয়াপ্ত করা মোবাইল ও ল্যাপটপ ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। ১০ দিনের হেফাজত চাওয়া হয়েছিল বিচারক ৮ দিনের মঞ্জুর করেছেন। এদিন আদালতে তোলার সময় অভিযুক্ত তরুণ সেনগুপ্ত বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সেটি অর্ধসত্য। বীরভূমে যেটা চলছিল সেই সময় সেটা বোঝানোর জন্য একটা প্রতিকী ছবি দিয়েছিলাম। এটা রাজনৈতিক চক্তান্ত। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবি সোমনাথ মুখার্জি বলেন, “আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তার মধ্যে ৬৬(এফ)(১)(এ)(১১১) ধারাটি এই মামলায় ধার্য হয় না। রাজনৈতিক কারনে সি আই ডি এই ধারাটি যুক্ত করেছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এক যুবকের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাদুড়িয়া, বসিরহাট এলাকা। ওই পোস্ট একশ্রেণির মানুষের ভাবাবেগকে আঘাত করায় তা নিয়ে এলাকায় গন্ডগোল শুরু হয়। বন্ধ হয়ে যায় স্কুল, কলেজ, দোকানপাট থেকে শুরু করে যাবতীয় পরিবষেবা। ঘটনার পরই ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। সোশাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক পোস্ট বন্ধ করতে শুরু হয় প্রশাসনের কড়া নজরদারি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোসাল নেট ওয়ার্কিং সাইটে উস্কানি মুলক বিব্রতি বা প্রচার কারীদের উপর পুলিশের নজরদারীর কথা জানিয়ে সকলেকে এই সব কাজ থেকে বিরত থাকাতে অনুরোধ করেছেন। এরই মধ্যে টুইটারে ভুয়ো পোস্ট করার জন্য বিজেপি নেত্রী নুপূর শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তারপর ফের সোশাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক পোস্টের জন্য গ্রেপ্তার হলেন বিজেপি নেতা তরুণ সেনগুপ্ত। এর আগে ইলাম বাজারে এক যুবকের এক ধর্মকে নিয়ে আপত্তিজনক ফেসবুক পোষ্টের জন্য উত্তাল হয় এলাকা। বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি তাপস রায়ের দাবি, তরুণবাবুকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
ছবি ও তথ্যঃ কৌশিক সালুই
[uam_ad id=”3726″]

Comments