Home » জেলার খবর » দু দিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা

দু দিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা

বীরভূম ২১ জুলাইঃ- দুদিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে জেলা জুড়ে বৃষ্টি যা শুক্রবারও অব্যাহত। এর জেরে জেলার বেশ কিছু এলাকার প্রায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে শুরু করেছে। আশঙ্কা বেড়েছে যদি এই একই ভাবে বৃষ্টিপাত জারি থাকে তাহলে আগামী দুদিনের মধ্যেই বীরভূম জেলার বেশির ভাগ অংশ জলে তলায় চলে যাবে। এদিন বীরভূম জেলা আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলা জুড়ে বৃষ্টিপাত আগামী দুদিনে আরো বাড়তেও পাড়ে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার বিকাল অবধি বীরভূমের জেলা জুড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সিউড়িতে ১২৫ মিমি, বোলপুরে ৮৫.৮মিমি, রামপুরহাটে ৭৬মিমি, ইলামবাজারে ৯৫.০ মিমি। জেলা জুড়ে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৮৬.৮ এবং গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৯৫.৬। এই দুদিনে বৃষ্টির জেরে বীরভূমের বিভিন্ন ড্যাম্প থেকে জলস্তর বিপদ সীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সিউড়ির কাছে তিলপাড়া ব্যারেজে জলস্তর রয়েছে ৬২.৭৮ মিটারে, ম্যাসাঞ্জোর ড্যামে জল রয়েছে ১২১.৩১ মি, হিংলো ড্যামে জল রয়েছে ৯৬.২১মি, ব্রাহ্মণীতে ৪৩.৫০মি, দ্বারকাতে ৫৩.৪৯মি, অজয় নদীতে ৩৯.৪১মি, ব্রাহ্মণী নদীতে ৩৩.০০মি এবং বাশলৈ নদীতে ৩১.৮৫মি। দুদিনে জেলা জুড়ে বিভিন্ন ড্যাম্পগুলি থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ সিউড়ির ময়ূরাক্ষী ড্যাম্পে ১১৩০০ কিউসেক, হিংলো ড্যাম্প থেকে ৯০০০ কিউসেক জল, ব্রাহ্মনী ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে ১১৬৬৪ কিউসেক জল, দ্বারকা ড্যাম্প থেকে ৪৭২৮ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এই জল ছাড়ার ফলে জেলার বেশ কিছু গ্রাম সাময়িক জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। যদিও গ্রামবাসীরা ইতিমধ্যেই আগাম বন্যার আশঙ্কা করে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা সূত্রে খবর, সিউড়ি, লাভপুর, কীর্নাহার, লাঘাটা, দুবরাজপুরের বেশ কিছু গ্রাম সহ আরো বেশ কিছু এলাকা জল মগ্ন হয়ে পড়েছে।এরফলে সেই গ্রামের বাসিন্দারা কিছু হলেও দূর্ভোগে পড়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের তরফে গোটা জেলাতেই খবর রাখা হচ্ছে। যদি কোনও পরিবার বা গ্রাম সমস্যায় পড়ে তাহলে তাদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা করবে বীরভূম প্রশাসন। অন্যদিকে এই বৃষ্টির জেরে জেলার বেশ কিছু শহর এলাকাও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সবার আগে রয়েছে জেলা সদর সিউড়ি। অভিযোগ সিউড়ি শহরের বেশ কিছু এলাকায় জল নিকাশি ব্যবস্থা অতি জঘন্ন থাকায় এলাকায় নর্দমা গুলি দিয়ে জল পাশ হচ্ছে না। সিউড়ি শহরের পশ্চিম লালদিঘী পাড়া এলাকার শ্রীপল্লী পাড়ায় নীকাশি খুবই খারাপ থাকার কারনে অতিবৃষ্টির ফলে বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরে ঢুকে যায় জল। একই ভাবে সিউড়ি সাজানো পল্লী এলাকাতেও একই হালের চিত্র ধরা পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ বারবার পুরসভাকে বিষয় গুলি জানানো সত্ত্বেও ওই এলাকাগুলির ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক করার জন্য কোনও ব্যবস্থায় গ্রহণ করছে না পুরসভা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ থাকার জন্য সিউড়ি সদর হাসপাতালের পুরাতন ওয়ার্ড ক্যাম্পাসটিও জলের তলায় চলে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ বাইরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা মেরামতির জন্য এলাকার হকার উচ্ছেদ করা হয়েছিল গত প্রায় ছয়মাস আগে। কিন্তু তার পর থেকে সেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক করার কোনও উদ্যোগ নেয় নি পুরসভা। জেলাশাসক পি মোহন গান্ধী বলেন, অতিবৃষ্টির জেরে এখনও জেলা জুড়ে কোনও আশঙ্কাজনক অবস্থার খবর পাওয়া যায় নি। প্রশাসনের কড়া নজরদারি রয়েছে, তবে যে কোনও রকমের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
তথ্যঃ কৌশিক সালুই
[uam_ad id=”3726″]

Comments