Home » জেলার খবর » স্কুল আছে, পড়ুয়া আছে, কিন্তু শিক্ষিকা নেই

স্কুল আছে, পড়ুয়া আছে, কিন্তু শিক্ষিকা নেই

উঁচু ক্লাসের ছাত্রীরা এখন শিক্ষিকা।
নানুরের কুমিরা সাওতা এ কে বালিকা বিদ্যালয়ের ঘটনা।স্কুলে মাত্র তিনজন শিক্ষিকা। চারদিন ধরে সকলেই অনুপস্থিত। ফলে স্কুলের ছাত্রীরাই এখন দিদিমণি, হ্যাঁ উঁচু ক্লাসের ছাত্রীরাই এখন দিদিমণি। এইভাবেই চারদিন ধরে চলছে নানুর থানার কুমিরা সাওতা এ কে বালিকা বিদ্যালয়। কবে স্কুলে স্বাভাবিক পঠন পাঠন শুরু হবে জানে না কেউ।
জানা গিয়েছে, এলাকার মেয়েদের কথা ভেবে ১৯৬৯ সালে নানুরের কুমিরা গ্রামে জুনিয়র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পথ চলা শুরু হয়। সেসময় অষ্টম শ্রেণীর মেয়েদের নিয়ে ক্লাস শুরু হলেও ২০১৪ সালে মাধ্যমিকে উন্নীত করা হয়। কিন্তু শিক্ষিকার সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। বর্তমানে স্কুলে ২১৫ জন ছাত্রী। শিক্ষিকা মাত্র তিন জন। ৬ টি শূন্যপদে আজও শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়নি। রয়েছে একজন করণিক এবং একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী। স্কুলে ছাত্রী অনুপাতে এমনিতেই শিক্ষিকার সংখ্যা কম। তার উপর প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা দাস এবং সহকারী শিক্ষিকা জয়ীতা পান মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। ফলে একমাত্র শিক্ষিকা তনুশ্রী মুখোপাধ্যায় দশভুজা হয়ে ছ’টি ক্লাস নিতেন। তিনি হঠাৎ অসূস্থ হওয়ায় শুক্রবার থেকে স্কুলে শিক্ষিকা শূন্য হয়ে পড়ে। করণিক পরেশনাথ সাহা অফিসের কাজে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন দফতরে ছুটে বেড়ান। ফলে স্কুলের ভার এখন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের উপর। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন থেকেই স্কুলে শিক্ষিকার সংখ্যা কম। শিক্ষা দফতরে জানিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি। তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে ছাত্রীদের”। শিক্ষিকারা না আসায় উঁচু ক্লাসের ছাত্রীরাই দিদিমণির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ক্লাস নেওয়া থেকে ছাত্রীদের হাজিরা নিচ্ছে তারাই। দশম শ্রেণীর মুসার খাতুন, নবম শ্রেণীর পায়েল খাতুন, অষ্টম শ্রেণীর সাইমা পারভীনরা এখন নিচু ক্লাসের বোনদের ক্লাস নিচ্ছে। তারা জানায়, কি করব। দিদিমণিরা আসছেন না। সবাই বাড়ি ফিরে যাব। তাই আমরা যতটা শিখেছি তা ছোট্ট বোনেদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছি। তাতে আমাদেরও কিছুটা লাভ হচ্ছে। নিচু ক্লাসের সিলেবাস ঝালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এদের কেউ নিচ্ছে বাংলা কেউবা ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান। নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে চারদিন ধরে এভাবেই চালাচ্ছে স্কুল। অন্যদিকে রান্নার কাজ যথারীতি চালিয়ে যাচ্ছেন মল্লিকা দাসরা। মঙ্গলবারও স্কুলে ১৫০ জনের বেশি ছাত্রী হাজির হয়েছে।
ছবি ও তথ্যঃ পরিতোষ দাস
[uam_ad id=”3726”]

Comments