বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাইপুকুর। যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট থাকলেও ছাইপুকুর রয়েছে মাত্র একটি। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হওয়ার পর থেকে এই পুকুরেই যাবতীয় ছাই ফেলা হয়। ফলে বিগত দুই তিন বছর আগেই এই ছাইপুকুর প্রায় সম্পূর্ণই ভরে ওঠেছে । অতপরঃ এই অতিরিক্ত ছাই একদিকে যেমন এই এলাকার নদী, চাষের জমিকে দূষিত করে তুলেছে ঠিক তেমনই অপরদিকে একটু ঝোড়ো হাওয়া দিলেই এই শুকনো ছাই উড়ে গিয়ে পাশ্ববর্তী গ্রামগুলির জনজীবন ব্যতিব্যস্ত করে তুলছে। এই ছাইপুকুরের ঠিক পাশেই রয়েছে ৬০ নং জাতীয় সড়ক। ফলে এই ছাই দূষণ গ্রাস করেছে সেখানেও।পরিস্থিতি এমনই যে, একটু বেলা বাড়ার সাথে সাথে শুরু হচেছ ঝোড়ো হাওয়া আর তাতেই ছাইদূষণে জাতীয় সড়কের পাশে সার সার দিয়ে দাড়িয়ে পড়ছে ছোট বড় গাড়িগুলি। বেশ কয়েক বছর ধরে একই পরিস্থিতি হয়েই চলেছে। আর তাই আজ এই এলাকার মানুষ দলবদ্ধ ভাবে এর প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।
এর আগে একাধিকবার এই ছাই দূষণে মুখ পুড়েছে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের। বিশিষ্ট পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত এর আগে এই দূষণ নিয়ে মামলা করেন জাতীয় পরিবেশ আদালতে। পরিস্থিতি এমনই পর্যায়ে পৌঁছায় যে,এই কেন্দ্র বন্ধের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় জাতীয় পরিবেশ আদালত হতে।
তবে বর্তমানে ভরে যাওয়া ছাইপুকুর থেকে দূষণ রোধের জন্য দ্বিতীয় ছাইপুকুর তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এবং চাষের জমি ও আশেপাশের চন্দ্রভাগা ,বক্রেশ্বর নদীগুলিতেও দূষণ আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
তবুও আপাততঃ যাতে এই পুরোনো ছাইপুকুর থেকে দূষণ রোখা যায় এই দাবিতে আজ পানুড়িয়া,মল্লিকপুর, রায়পুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ সমবেতভাবে বেশ কয়েক ঘন্টা পথ অবরোধ করেন। বেলা এগারোটা হতে এই অবরোধ শুরু হয়। অবরোধকারীদের দাবি,অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে এই ছাই দূষণ বন্ধের ও নতুন ছাইপুকুরের কাজ দ্রুত শেষ করার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। খবর পেয়ে জেনারেল ম্যনেজারের প্রতিনিধি এসে দূষণ রোধের জন্য প্রয়োজনীয় আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস মেলে।
তথ্যঃ- গৌড় চক্রবর্তী