বীরভূমের সিউড়ি থেকে রাজনগর যাওয়ার রাস্তায় নিরীহ এক গ্রাম কড়িধ্যা। আপাত শান্ত নিরুত্তাপ কড়িধ্যা আক্ষরিক অর্থেই মন্দির নগরী। এক পা যেতে না যেতেই মন্দির। প্রায় সব বাড়িতেই লাগোয়া শিব মন্দির। সংখ্যা ১৫০- এরও বেশি। সবই একই নক্সা। সব মন্দিরেই নিত্য পূজার আয়োজন। নিজেদের বাঁচাতেই নাকি এই মন্দির তৈরি করেছিলেন এখানকার বাসিন্দারা। সে প্রায় ৩০০ বছর আগের গল্প। তখন বর্গির আক্রমণে লন্ডভন্ড বীরভূমের রাজনগর। বীর রাজার সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাওয়ার সময় কড়িধ্যা গ্রাম পেরোতে হত বর্গীদের। বাড়ি ঘর লুটপাট ভাঙচুর চালাতো তারা। কড়িধ্যার শান্তি প্রিয় মানুষ কিভাবে বর্গী আক্রমন ঠেকাবেন ভেবে কুল পাচ্ছিলেন না। শেষে নিজেদের বাড়ির সামনে একটি করে শিব মন্দির তৈরি করেনিলেন তারা। কারন তারা শুনেছিলেন বর্গীরা নাকি শৈব। শিব যেখানে সেখানে নাকি আক্রমন করে না বর্গীরা। এক সময় চলে যায় বর্গীরা, থেকে যায় মন্দিরগুলি।
মন্দিরের গর্ভগৃহ হয়ে ওঠে জমিদারদের গুপ্তধন রাখার গোপন কুঠরি। তবে পরে এই গ্রামের অনেক মন্দির থেকেই উদ্ধার হয় গুপ্তধন।
সময় পেরিয়ে যায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম দায়িত্ব নেয় মন্দিরের। অনেক মন্দির আজ ভগ্নপ্রায়। চলছে সংস্কারের কাজ। সংস্কারের কাজে হাত লাগিয়েছে কড়িধ্যা পঞ্চায়েতও। ঐতিহ্যের কড়িধ্যা বাংলার পর্যটন মানচিত্রে জায়গা পাক বা না পাক, নিজেরাই নিজের ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে বদ্ধ পরিকর।