Home » জেলার খবর » আবার মিষ্টির নতুন ঠিকানা

আবার মিষ্টির নতুন ঠিকানা

বোলপুর : বছর চারেক আগে হাসপাতালের আস্তাকুঁড়ে কাঁদছিল এক সদ্যজাত। তাকে ঘিরে এক কালো কুকুর। দেখা মাত্রই ছুটে যান হাসপাতালের সুইপার শান্তা মিরধা।, কোলে নিয়ে কোয়ার্টারে আসেন। তারপর থানায় গেছেন কয়েকবার কিছু ব্যবস্থার জন্য, কিন্তু তাতে সে সময় কিছু ফল হয়নি। জেলাতে তখন চাইল্ড লাইনের অফিসও ছিল না। শিশুটির ঠিকানা কি হবে ঠিক করতেও কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই বৃদ্ধ মন্টু মিরধা ও বৃদ্ধা শান্তা দেবীর কাছেই মিষ্টি থাকতে শুরু করে।
দেখতে খুবই মিষ্টি, তাই শান্তা দেবীই শিশুটির নাম রাখেন মিষ্টি। মিরধা পরিবারের একমাত্র ছেলে তাদের সাথে যোগাযোগ না রেখে রিকশা চালায় সিউড়িতে।
এরপর একদিন স্বচ্ছ ভারত মিশনের তরফে বোলপুর হাসপাতালে আসে চাইল্ড লাইনের সদস্যরা, সেখানে সে মিষ্টিকে দেখে শান্তা দেবীর কোলে। চাইল্ডলাইনের সদস্যদের সন্দেহবশত জিজ্ঞাসা করেন মিষ্টির কথা শান্তা দেবীকে। তারপরেই সমস্ত ঘটনা জানা হয় চাইল্ডলাইনের। তারপর নিয়মের কারণেই ছোট্ট মিষ্টিকে যেতে হয় চাইল্ডলাইনের হোমে।
চাইল্ড লাইন মিষ্টির দায়িত্ব বুঝে নিয়েই প্রথমে ডাক্তারি পরীক্ষা করায়। আর মিষ্টি গোটা ঘটনাতেই হতভম্ব হয়ে গেছে কী করবে বুঝতে পারছে না। তার পৃথিবী বলতে ওই হাসপাতাল চত্বর। সবাই তাকে চেনে। তাই থানায় নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সেরে নেওয়ার পাশপাশি তাকে বিস্কুট দেওয়া হলেও সে তা মুখে তোলেনি। প্রথমেই জড়সড়। পরে শান্তাদেবীর হাত থেকে সে বিস্কুট খেল। তারপর কিছুতেই শান্তা মির্ধার কোল ছেড়ে চাইল্ড লাইনের কর্মীদের সঙ্গে যেতে চায় না। কিন্তু নিয়ম তো মানতেই হবে। নিয়মের বেড়া জালের কাছে হার মানে ভালোবাসা, অপত্য স্নেহের মতো সূক্ষ অনুভূতি। মিষ্টি চলে যায়। কোল খালি হতেই অঝোরে বৃষ্টি নামে শান্তাদেবীর চোখে।

ছবি ও তথ্যঃ মুনতাজ রহমান

Comments