বিগত কয়েক বছরে গ্রামের বেশ কিছু পুরুষ অল্প বয়সেই মারা গিয়েছেন। বর্তমানে অনেক যুবক মারন রোগ টিবিতে আক্রান্ত। এলাকাবাসীদের দাবি এই সবের মুলেই হল চোলায় মদ। আর সেই চোলায় মদ বিক্রি বন্ধের দাবি নিয়ে সোমবার বীরভূমের সিউড়ি থানার আবদারপুর গ্রামের আদিবাসী মহিলারা থানাতে হাজির হলেন। জেলা আবগারি দফতর জানিয়েছে চোলাই বন্ধের জন্য তারা সব ধরনের চেষ্টা করছেন।
সিউড়ি শহর লাগোয়া ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আবদারপুর গ্রাম। এলাকাটি মুলত আদিবাসী অধ্যুসিত। তপশিলি জাতীর কিছু পরিবারও আছে সেখানে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ এলাকায় চোলায় মদ বিক্রি হচ্ছে রমরমিয়ে। সন্ধ্যা নামলেই ওই জাতীয় সড়কের ধারে চোলাই কারবারীরা তাঁদের মারন দ্রব্য নিয়ে হাজির হয়ে যান। এর সঙ্গে কিছু বাড়িতেও চোলাই বিক্রি হয়। চোলাই গুলি মুলত বাইরে থেকে আসে। শুধু আবদারপুর বাসীরা নন দূর দুরান্তের লড়ি চালকেরা তাঁদের গাড়ি থামিয়ে চোলায় মদ খায় সেখানে। সেই চোলাই বন্ধের আর্জি নিয়ে ওই এলাকার মহিলারা সিউড়ি থানায় হাজির হলেন। তাঁদের দাবি বিগত কয়েক বছরে ২০ থেকে ২২ জন পুরুষ মানুষ খুব কম বয়সেই মারা গিয়েছেন। সেই সমস্ত ব্যাক্তিরা নিয়মিত চোলায় মদ পান করতো। এখনো সেই ধারা অব্যাহত। এলাকার বহু যুবক এখন দুরারোগ্য টিবিতে আক্রান্ত হয়ে কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। চোলাই মদের ফলে সেই সমস্ত পরিবার সর্বশান্ত হয়েছে। অনেক পরিবারের ছেলে মেয়েদের পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে তাঁদের দাবি। তাই চোলাই বন্ধ করে গ্রামের পুরুষদের বাঁচাতে মহিলারা একজোট হয়েছেন । এদিন প্রায় জনা পঞ্চাশেক আদিবাসী মহিলা সিউড়ি থানাতে এসে চোলাই বন্ধের জন্য আবেদন করে যান। জবা মাড্ডি, সুখী কিস্কু, লখুমনি হেমরম, রমনি কিস্কুরা বলেন, মদ খেয়ে স্বামীরা সব মারা যাচ্ছে। অল্প বয়সের ছেলেরাও চোলাই খাচ্ছে। ফলে সংসারের অভাবের সঙ্গে নিত্য অশান্তি লেগে থাকছে। তাই আমরা পুলিশের কাছে বাধ্য হয়ে দ্বারস্থ হয়েছি। অবিলম্বে চোলাই মদ বিক্রি বন্ধ করা হোক। বীরভূম জেলা আদিবাসী উন্নয়ন গাঁওতার সভাপতি সুনিল সরেন বলেন, আমরা মদ্য পান বর্জন করার জন্য সমাজে সচেতনতা কর্ম সুচী চালাবো। বীরভূম জেলা আবগারী দফতরের সুপার বাসুদেব সরকার বলেন, আমাদের দফতরের সীমিত ক্ষমতার নিয়েই আমরা সাধারন মানুষের কাছে প্রচার করি যে চোলাই মদ খাওয়া অত্যন্ত বিপদ জনক। সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এই কাজে। পাশাপাশি চোলাই কারবারীরা তাঁদের বে আইনী কাজ থেকে বেড়িয়ে এলে তাঁদের পুনর্বাসনে সহায়তা করবে প্রশাসন।
ছবি ও তথ্যঃ কৌশিক সালুই
[uam_ad id=”3726″]