প্রতীকি ছবি
সুস্থ হয়ে যাওয়ায় এক প্রসূতিকে আজ সকালে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। প্রয়োজন না থাকায় প্রেসক্রিপশনে লেখা হয়নি কোনও ওষুধ। কিন্তু, অভিযোগ, দালালের খপ্পরে পড়ে ওষুধ কিনতে বাধ্য হয় প্রসূতির পরিবার। পরে দোকানে বিক্ষোভ দেখানো হয়। দোকানের কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য রামপুরহাট থানার দাদপুর গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ চাঁদনি বিবি প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালেই তিনি সন্তানের জন্ম দেন। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। প্রয়োজন না থাকায় চিকিৎসক কোনও ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লেখেননি। এরপর বাড়ি যাওয়ার জন্য হাসপাতালের দেওয়া নিশ্চয় যানে চাপেন। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, মারুতি চালক মহিলার পরিবারকে ওষুধের দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে ৭২৬ টাকার ওষুধ দেওয়া হয় প্রসূতির পরিবারকে। প্রসুতি চাঁদনি বিবি বলেন, “চিকিৎসক আগেই জানিয়ে ছিলেন কোনও ওষুধ লাগবে না। তারপরও গাড়ির চালক আমাকে হাসপাতাল চত্বরের একটি দোকানে ওষুধ কিনতে বাধ্য করে। সন্দেহ হওয়ায় আমি ওষুধ গুলো নার্সের কাছে নিয়ে যাই। নার্স পরিষ্কার জানিয়ে দেন, চিকিৎসক কোনও ওষুধ লেখেননি। এরপরই প্রসূতির পরিবার দোকানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দোকানের কর্মী স্বরূপ ঘোষকে আটক করে। জেরায় স্বরূপ স্বীকার করে, “দালালের চাপে আমাদের এভাবে ওষুধ দিতে হয়।” পুলিশ গাড়ির চালক অসীম শেখকে খুঁজছে।
প্রসঙ্গত, বীরভূম জেলার প্রায় প্রতিটি সরকারি হাসপাতালেরই ঠিক একই চিত্রের অভিযোগ রয়েছে। রাজ্য সরকার যতই সুলভ মুল্যের ওষধের দোকান বা হাসপাতাল থেকে ওষধ সরবরাহ করুক না কেন এক বিশাল দালাল চক্র এই সব সরকারি নিয়ম কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের দালালির কারবার। এই চক্রের মধ্যে যেমন কিছু ফোরে দালাল রয়েছে, তেমনি রয়েছে কিছু ওষধের দোকানদার। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, এই সব দালালির কারবারের সাথে যুক্ত সাধারণত সরকারি হাসপাতাল কেন্দ্রীক ওষধের দোকান গুলি। জনৈক ব্যক্তি সরকারি হাসপাতাল থেকে অশিক্ষিত বা কম শিক্ষিত গ্রামের নিরিহ রোগীদের ঘারে কোপ সবায়। তাদের ধারবাকি ওষধ কিনিয়ে দেওয়ার নামে তাদের নিয়ে যায় এলাকার ওষধের দোকান গুলোতে। ডাক্তারের প্রেস্কিপশনের এক পাশে ছোট্টো করে লেখা থাকে তাদের দালালির নম্বর। এরপর এই রোগীকে সেই দোকান থেকে ওষধ কিনিয়ে দিয়ে দালালরা তাদের কমিশন হাতিয়ে নেন ওষধের দোকানদারদের কাছে। পাশাপাশি ওষধের দোকানদাররাও সামান্য লাভের আশায় ওই সব গরিব খেটে খাওয়া মানুষদের সর্বোশান্ত করার ব্যবস্থা করেন। অথচ এই চক্রের কাজ কারবার প্রকাশ্যে প্রায় প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের দরজায় দরজায় চললেও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গুলির কোনও হেলদোল নেই। জেলার রামপুরহাট হাসপাতালেই এদিন এক দালালের খপ্পরে পরে সর্বোশান্ত হতে বসে ছিলেন এক প্রসুতি। যদিও এই বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা বা রামপুরহাট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখ খুলতে চান নি। একাংশ স্বাস্থ্য কর্মীর দাবী হাসপাতালের বাইরে বা ক্যাম্পাসে কি হচ্ছে সেটা দেখা তাদের কাজ নয়। জেলা সদর সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এলাকাতেও কিছুটা একই অভিযোগ রয়েছে রোগী আত্মীয়দের।
তথ্যঃ মায়া সালুই
[uam_ad id=”3726″]