বীরভূম ২২ জুলাইঃ- বৃষ্টি কমতে থাকায় বীরভূম জেলা বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক পরিস্থিতি দিকে। তবে দুটি ভিন্ন নদী থেকে এক ছাত্র এবং এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে জেলা শাসকের কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় সেতু ও কজওয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে আছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে নিম্নচাপের জেরে প্রবল বৃষ্টি পাত চলছে বীরভূম জেলা জুড়ে। শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থতি উন্নতির দিকে। সাঁইথিয়া থানার আহমেদপুরের কুরুমসাহা গ্রামের স্কুল ছাত্র অর্ণব চট্টোপাধ্যায়(১১) বক্রেশ্বর নদীতে বন্যার জল দেখতে গিয়ে পরে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ২০০ মিটার দূর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবার সকালে সে গ্রাম থেকে আহমেদপুরে টিউশনি পড়তে গিয়েছিল । বাড়ি ফেরর পথে সে নদীতে বন্যার জল দেখতে গেলে পা হরকে জলে পড়ে যায় ও মর্মান্তিক ঘটনা টি ঘটে। অন্যদিকে শুক্রবার সন্ধায় দ্বারকা নদীর ডেউচা জলাধারের নিচে থেকে এক অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার মৃত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ মধ্যে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান নদীর জলে পড়ে বা বন্যার জন্য ওই মহিলা ভেসে গিয়েছিলেন, তাতেই তার মৃত্যু হয়েছে। মৃতের পরিচয় জানা চেষ্টা করছে পুলিশ। শনিবার সিউড়ি মহকুমার ৭৫.৪ মিমি, বোলপুর মহকুমায় ৪.৪ মিমি এবং রামপুরহাট মহকুমায় ১৫ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। যা বিগত দিন থেকে তুলনা মুলক ভাবে কম। ময়ূরাক্ষী নদীর তিল পাড়া জলাধার থেকে এদিন সকালে ৪১১৮ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, হিংলো নদীর জলাধার থেকে ৪২৩৮ কিউসেক, ব্রাহ্মণী মদীর বৈধরা জলাধার থেকে ২০১৮ কিউসেক, দ্বারকা নদীর ডেউচা জলাধার থেকে ২০২৬ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। যদিও ম্যাসানজোড় জলাধার থেকে কোন জল ছাড়া হয়নি বলে জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে। তিন দিনের বৃষ্টির ফলে জেলার সিউড়ি ১ও ২ ব্লক, খয়রাসোল ব্লক, রাজনগর ব্লক, রামপুরহাট ২ ব্লক, দুবরাজপুর ব্লক, নলহাটি ১ ব্লক, মুরারই ১ ব্লক এবং সাঁইথিয়া ব্লকের ১৮৪ টি গ্রামে অতিবৃষ্টির জন্য বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ২২৫ টি বাড়ি সম্পুর্ন এবং ৩২০ টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সিউড়ি ২ ব্লকের ল বাগান আদিবাসী পাড়া প্রথমিক বিদ্যালয়ে ১২০ জনের আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে শুক্রবার বিকেল থেকে। কুয়ে নদীর লাঘাটা ব্রিজে ৮ টি নৌকা ও ২ টি স্পিড বোট চলাচল করছে। কাটোয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে সড়ক পথে। সেতুর উপরে জল ওঠায় ওই সেতু দিয়ে দুই দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ। শাল নদীর গড়গড়া ঘাটে রানীগঞ্জ-মোড় গ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে কজওয়ে ভেঙ্গে দুই দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ। ফলে সিউড়ির সঙ্গে আসানসোল ও পান্ডবেশ্বরের সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। জল কমলেই দ্রুততার সঙ্গে ওই ভেঙ্গে যাওয়া অংশ মেরামতির জন্য প্রস্তুত প্রশাসন। বক্রেশ্বর নদীর জল বাড়ার জন্য সিউড়ি ১ ব্লকের কামার ডাঙ্গালে সেতুর দুই পাশের রাস্তা ভেঙ্গে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন,আহমেদপুর- বোলপুর রাজ্য সড়ক বন্ধ, কোপাই নদীতে জল বাড়ার জন্য সতীপীঠ কঙ্কালী তলাতে জল ঢুকে গিয়েছে। জেলা জেলা ডিজাস্টার ম্যনেজমেন্ট আধিকারির রামাশিস প্রসাদ জানান, বৃষ্টি কমতে থাকায় বন্য পরিস্থতি নিয়ন্ত্রনে। শনিবার নতুন করে কোন এলাকায় জল ঢোকেনি। তবে বৃষ্টি পারলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। প্রশাসন তার মোকাবিলায় প্রস্তুত। ২৪ ঘন্টার জন্য কট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
ছবি ও তথ্যঃ মায়া সালুই
[uam_ad id=”3726″]