সবকিছুই কেমন যেন অভ্যাস হয়ে গেছে ;
সন্ধ্যা নামলেই পান ভর্তি গালে কর্কশ ডাক,
উই পোকা খাওয়া চৌকাঠ পেরিয়ে নতুন নতুন দেহ,
আর রাসায়নিক কারচুপি
তবু চোখ বুজলেই একটা গল্প ভেসে আসে,
ভারী মজাদার এক গল্প…..
সেদিন ক্লাস এইট-এ ফাস্ট হয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম,
রক্তে ক্যানসার নিয়ে বাবা সবে শয্যায় সজ্জিত হয়েছিলেন ;
লোকের ঘরে ঝাঁটা-জুতো খেয়ে মায়ের দুটো রোজগার,
বাকিটা কাকার কয়লা ব্যবসার ছিটেফোঁটা,
এভাবেই কাটছিল দিনগুলো–
সেদিন কাকা বললো,
“চল, দিল্লি চল, উচ্চ শিক্ষা নিবি…..”
কাকার হাত ধরে সেই যে বেরোলাম;
তার পর থেকে এটাই আমার স্কুল,
এটাই আমার শিক্ষা…
প্রথম প্রথম দেহের যন্ত্রণায়, মানসিক অত্যাচারে ভুগতাম প্রায়….
তারপর যেদিন বাড়ি গিয়ে মাকে সব জানালাম,
আধ-কাঁদো সুরে উত্তর এলো–
“একবার যখন সব দিয়েইছিস, তখন আর দিতে ক্ষতি কি ?”
সেদিন থেকে আজ অব্দী আর একটুও কষ্ট পাইনি…..
বরং ভালই লাগে এইটা ভেবে
যে আমি নিজেই নিরোধক টিউবে আটকা পড়েছি,
হয়তো এটাই আমার জীবনের উচ্চ শিক্ষা !
স্কুলের বাইরে যাদের দেখে আগে পাগল মনে হত,
আজ তাদেরই সাথেই লাইন দি,
খদ্দেরের আশায়…..
লজ্জায় যে পোশাক কখনো গায়ে চড়াইনি,
আজ সেগুলোই আমার দর বাড়ায়…..
তবুও যখন অচেনা শরীরগুলো আমার দেহে বিষ উগড়াই,
মনে পরে মা-ভাই-বোন, সেই করুণ মুখ গুলোর কথা…..
যতক্ষণ আমার মুখে প্রতিবাদ আছে,
ওদের বুকে আশা নেই ;
যতক্ষণ আমার বুকে কাপড় আছে,
ওদের মুখে ভাত নেই…..
জাভেদ আনোয়ার