চোখ বাঁধলেও সব নাকি দেখতে পায় প্রিয়া, রহস্য ফাঁস করল বিজ্ঞান মঞ্চ।চোখ বাঁধলে কেউ দেখতে পায় না। এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। তাই চিকিৎসকরাও কেউ মেনে নিতে পারত না। গত দুদিন আগে বীরভূমের সিউড়ির এক গ্রামের বাসিন্দা ছোট্ট প্রিয়া নাকি চোখ বাঁধলেও সবই দেখতে পায় বলে দাবী করেছিল তার পরিবার। একথা সংবাদ মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। সেই ঘটনার রীতি মতো এই ঘটনার রহস্য নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গেছিল। সবাই তাদের বাড়ি গিয়ে দেখেন প্রিয়াকে চোখ বেধে দিলেও সে ছবি আঁকতে পারছে, লিখতে পারছে, বই পড়তে পারছে, রাস্তা পারাপার করতে পারছে। এই ‘বিস্ময় বালিকা’র রহস্যের সমাধানে সিউড়ির রস্তানপুরে মঙ্গলবার সকালে তার বাড়িতে যান বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা। তাঁদের সামনেও কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে অবলীলায় রং করা থেকে বই পড়া, সবই করছিল সেই মেয়ে। তারপর বিজ্ঞান মঞ্চের প্রতিনিধিরা প্রিয়াকে পর্যবেক্ষন শুরু করেন। জানা গেছে, প্রিয়াকে কোলে বা তার সামনে মেঝেতে কিছু কাজ করতে দিলে সে করতে পারছে চোখে কাপড় বেধে। কিন্তু তার মাথার পেছনে বা অন্য কোনও পাশে কিছু হলে সে দেখতে পারছে না। এমন কি সব শেষে তাকে হাতে করে চোখ ধরে ফেললে সে আর কিছুই বলতে পারছে না। বিজ্ঞান মঞ্চের দাবি, এর থেকে স্পষ্ট, কাপড় ভেদ করে তার চোখে যা প্রতিফলিত হচ্ছে সেটাকেই দেখতে পাচ্ছে প্রিয়া। এর মধ্যে অলৌকিকত্ব কিছু নেই।
তবে বিজ্ঞান মঞ্চ তাদের যুক্তি দিলেও চোখ বাঁধা অবস্থায় প্রিয়া যেভাবে অবলীলায় পড়তে পারছে সে নিয়ে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী মহল নানা যুক্তি দিচ্ছে। সিউড়ির কয়েকজন চিকিৎসা মহলের মতে, চোখে যদি কোনও আলো প্রতিফলিত না হয় তাহলে কারও পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। একই ভাবে বিজ্ঞান মঞ্চের প্রতিনিধিরা হাত দিয়ে চোখ ধরে ফেলায় তার চোখে যেহেতু আর কোনও আলো পড়ছে না তাই প্রিয়া নিশ্চুপ হয়ে থাকছে। বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক দেবাশিস পালের দাবী, আমরা জানতাম এটা হতে পারেনা। কাপড়ের ভেতর দিয়ে প্রতিফলিত লেখা সে দেখতে পাচ্ছে। এতে অলৌকিক কিছু নেই। চোখ বন্ধ করে সেটা সম্ভব নয়। তার বাবা তারিণী মণ্ডল বলেন, “প্রিয়া ছোট বয়স থেকে যোগাসন, ধ্যান করে। তার জেরেই চোখ বাঁধা থাকলেও সে স্পষ্ট দেখতে পায় এটা হতে পারে।”
তথ্যঃ কৌশিক সালুই
[uam_ad id=”3726″]