প্রেমের বিবর্তন
–কাবু মণ্ডল
ছেলেবেলা থেকেই বিষ্ণু লাজুক ছেলেই ছিলই।ক্লাস এইট পাস করে নতুন যখন স্কুলের জন্য ,প্রথমবার হাফ প্যান্ট ছেড়ে ফুল প্যান্ট পরতে হবে, তাতে যত না আনন্দ হওয়ার দরকার, তার থেকে প্রথম বার অন্তর্বাস পরতে হবে এই ভেবেই মাথা খারাপ হচ্ছিল।
সেই বিষ্ণুকেই দেখলাম, অনেকদিন পর,
নদীর খেয়াঘাটে,আমাকে দেখেই আধখাওয়া সিগারেটটা ফেলে,কোনোরকম মুখের ধোঁয়া বাতাসে মিশিয়ে বলল, কী গো কাবু দা!অনেক দিন পর গ্রামের বাড়ি যাচ্ছো?বললাম মা’কে দেখতে যাবো রে । স্মার্টফোন বাজছে বিষ্ণুর, বললাম ধর ফোনটা, বলল বাজতে দাও, কেন রে?আমি বললাম। কলটা কেটে গেল।বুজলাম, ডাল মে কুছ কালা হে!
ঠোট কাঁটার মতো বলেই ফেললাম, প্রেম করছিস নাকি?বিষ্ণুর মুখে আসামির ধরা পড়ার ভাব।বললো না গো ,সবাই বন্ধু ।তাহলে ?ও তুমি বুঝবে না।সত্যিই কী বুঝবো না?জানি আমরা যখন স্কুলে পড়তাম, তখনও প্রেম ছিল,অর্পিতা পড়া বলার সময়, বার বার চুলে হাত দিত,আমার কিন্তু বেশ ভালোই লাগত, তবে সেইভাবে বলতে পারি নি।বরাবরই ভালো ছেলে থাকার বাধ্যতা।তারপর মীনাক্ষী সেও তো বেশ সুন্দরী ছিল, বুদ্ধিমতী।বেশ প্রতিযোগিতা হত পড়াশোনায়। ভালো লাগত এদের নিয়ে অপরিণত মনের বয়ঃসন্ধির রঙিন স্বপ্ন দেখতে। মাঝে মধ্যে স্কুলের দেওয়ালে (কাবু+অর্পিতা) কখনও কখনো (কাবু+মীনাক্ষী) লেখা দেখাত বন্ধুরা ,বেশ ভালোই লাগত।তবে বেশ ভয়ে ভয়ে থাকতাম ,স্যাররা যেন এই সব না দেখে ,এই ভেবে।তারপর মাধ্যমিকের পর বাইরে থেকে পড়া। টিউশনে মেয়েদের পাশে বসে পড়া,টেস্টোস্টেরন বেশ ক্ষরিত হত।তারপর মোবাইল পাওয়া।মোবাইল প্রেম।ঘন্টার পর ঘন্টা কথা হয়তো হয় নি, সারাদিন ।তবে মনের মানুষকে সজ্ঞানে দুঃখ দিতে পারি নি। বিষ্ণু কী জানি কী প্রেম করছে?, যাই ওই তো নৌকা ঘাটে, চল রে, চাপি নৌকায়…