Home » জেলার খবর » আদিবাসী উন্নয়ন সমিতি ‘ল্যাম্পসের” নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাল এলাকা

আদিবাসী উন্নয়ন সমিতি ‘ল্যাম্পসের” নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাল এলাকা

রাজনগর ১৯ জুনঃ- আদিবাসী উন্নয়ন সমিতি ‘ল্যাম্পসের” নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাল এলাকা। ঘটনায় এক তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন, জখম কয়েক জন তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী। এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি করা হয়েছে ও অনেক মোটর বাইক ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বীরভূমের রাজনগর থানা এলাকায়। জেলা তৃনমূল নেতৃত্বের দাবি মাওবাদিদের সঙ্গে বিজেপিও সিপিএম আঁতাত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে মৃত তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী হলেন বলরাম মন্ডল(৪২)। বাড়ি রাজনগর থানার মুরাদগঞ্জ। এদিন তাকে রাজারকেন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে গুলি বিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে সিউড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তার ডান দিকের পাঁজরে গুলি লেগেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় আরো ৬ থেকে ৭ জন তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী জখম হয়েছে বলে তৃনমূল কংগ্রেস সুত্রে দাবি করা হয়েছে। এদিন বেলা ১০ টা থেকে সিসাল ফার্ম ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে শুরু হয় রাজনগর আদিবাসী ল্যাম্পস সমবায় সমিতির নির্বাচন ও বেলা ২ টার সময় শেষ হয়। ৬৮ টি সিটের জন্য মোট ১৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ও সমতির ১৭২২ জন সদস্য ভোটার। বর্তমানে বামপন্থিরা সমবায় সমিতির ক্ষমতায় আছে। তৃনমূল কংগ্রেসের সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিরোধীরা এক জোট লড়াই এ নেমেছে। অভিযোগ ভোট গ্রহণ আগে থেকেই দুই পক্ষ ভোট কেন্দ্রের ৫ কিমি আগে রাজারকেন্দ এলাকায় জমায়েত শুরু করে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমায়েত হয়েছিলেন তৃনমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। সেখানে বিরোধীরা আক্রমন করে বোমা, বন্ধুক,তীর ধনুক নিয়ে। ঘটনাস্থল থেকে প্রান ভয়ে পালিয়ে আসেন তৃনমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। এই সুযোগে তাঁদের ফেলে যাওয়া ১২ টি মোটর বাইকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই সময় তৃনমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী বলরাম মন্ডল তার সহ কর্মী ব্লক যুব সভাপতি রানা প্রতাপ রায়ের সঙ্গে ছিলেন। সেই সময় তিন জন দুক্সৃতি মোটর বাইকে এসে বলরামকে গুলি করে পালিয়ে যায়। তার ডান দিকের পাঁজরে গুলি লাগে। ঘটনার প্রত্যক্ষ দর্শী রানা প্রতাপ রায় বলেন, মিলন শেখ নামে এক বিজেপি কর্মীর সঙ্গে আরো দুই জন ছিল যারা আমার অপরিচিত। তারা সকলে আমাদের কাছে আসে মোটর বাইক নিয়ে ও বলরাম কে গুলি করে পালিয়ে যায়। এদিকে মিলন শেখ ঘটনায় বলনে, সকাল থেকে এলাকায় উত্তেজনা ছিল পুলিসকে বলা হলেও গুরুত্ব দেয়নি। তৃনমূলের কর্মী সমর্থকরা আমাদের কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা করে। পাল্টা আমরাও প্রতিরোধ করে আক্রমন করি। যদিও খুনের ঘটনায় জড়িত নয়। তৃনমূল দুক্সৃতিরা নিজেদের লোককে চিনতে না পেরে গুলি করে পালিয়েছে। জেলা তৃনমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মন্ডল বলেন, বিজেপি সিপি এম কে সঙ্গে নিয়ে ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকে মাওদাবি নিয়ে এসে এই হত্যা লীলা চালিয়েছে। যে ধরনের বোমা ব্যবহার করা হয়েছে তা জেলাতে প্রথম। এলাকায় যথেচ্ছে বোমাবাজি করেছে বিরোধীরা। আমরা মৃত তৃনমূল কর্মীর পরিবারকে সর্বত ভাবে সহায়তা করবো। জেলা বিজেপি সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, তৃনমূল কংগ্রেস এখন সব জায়গাতে মাওবাদী ভুত দেখছেন। বিজেপি এই ধরনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তৃনমূল যদি এতো উন্নয়ন করেছে তা হলে ছোট্ট নির্বাচনে এতো লড়াই করতে হতো না। আর যেখানে আদিবাসীদের নির্বাচন সেখানে আদিবাসী যারা যারা নয় তারা কি করছিল? বিজেপি এই ঘটনায় কোন ভাবেই যুক্ত নয়। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্তম সুধীর কুমার বলেন, ঘটনায় ৩ জনকে জিজ্ঞাসা বাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ঘটনায় সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ছবি ও তথ্যঃ কৌশিক সালুই
[uam_ad id=”3726″]

Comments