বীরভুম ২৮ জুলাইঃ-অপরাধ ছিল গ্রাম্য বিবাদের জেরে মারামারিতে জখম এক গ্রামবাসীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো, আর সেই কারনে নৃশংস ভাবে দুস্কৃতিদের হাতে খুন হতে হয়েছিল এক যুবককে। সেই ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে সাত জন ব্যাক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা দিলেন বীরভুমের সিউড়ি জেলা আদালতের বিচারক।
আদালত সুত্রে জানা গিয়েছে বীরভুমের খয়রাসোল এলাকার কাঁকরতলা গ্রামের বাসিন্দা আবু খালেক ওরফে মন্টু নামে এক যুবক ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল খুন হন। ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ওই গ্রামের বাসিন্দা মূল অভিযুক্ত শেখ ইউনুশ, শেখ তোতা, শেখ আফজল, শেখ নুরু, সেখ সেলিম, শেখ মান্নান এবং আলিমুদ্দিন সেখ কে দোসী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা দিলেন দ্রুত মামলা নিস্পত্তি কারী আদালতের বিচারক উমেশ সিং। শুক্রবার এই রায় দেন বিচারক।
ঘটনার সুত্রপাত ওই দিন মূল অভিযুক্ত সেখ ইউনুশ ও তার দল আলাউদ্দীন শেখ নামে এক ব্যাক্তিকে মারধোর করে ব্যাপক ভাবে। আলাউদ্দীনকে জখম অবস্থায় সিউড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য শেখ মন্টু তার দুই সঙ্গী আবু জাফর ও মহিদুল শেখকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। আলাউদ্দীন কে হাসপাতালে ভর্তি করে বাড়ি ফেরার পথে কাঁকরতলা গ্রামের পীরতলা এলাকায় তাঁদের ট্রেকার গাড়ি থামায় ইউনুস ও তার দলবল। বোমা পিস্তল নিয়ে নিয়ে মন্টুর উপর আক্রমন করে। বাকি দুই জন পালিয়ে প্রানে বেঁচে যায়। ঘটনায় গুরুতর জখম অবস্থায় মন্টুকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই এলাকায় শিক্ষিত যুবক শেখ মন্টু খুব জনপ্রিয় ছিল। সে গৃহ শিক্ষকতার কাজ করতো। যে কারুর বিপদ আপদে ঝাঁপিয়ে পরা ছিল তার কাজ। আর এক জন মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে এভাবে তাকে প্রান দিতে হবে গ্রাম বাসীরা কেও মেনে নিতে পারেনি। তার খুনের ঘটনায় অপরাধীদের এদিন যাবজ্জীবন সাজা হওয়ায় খুশি তার গ্রামের বাসিন্দারা। মন্টুকে খুনের ঘটনায় তার এক ঘনিষ্ট মান্নান শেখ তৎকালীন খয়রাসোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ঘটনার দিন। ঘটনায় পুলিশ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জসিট দেয়। ১৮ জন সাক্ষের সাক্ষ গ্রহনের পর বিচারক বৃহস্পতিবার মূল অভিযুক্ত ইউনুশ সহ ৭ জনকে দোসী সাব্যস্ত করেন। সিউড়ি আদালতের সরকারী আইনজীবী রঞ্জিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, মন্টু সেখ কে খুনের অপরাধে সেখ ইউনুশ সহ সাত জনকে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৪৮ এবং ৩০২/১৪৯ ধারায় দোষী সাবস্ত করে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ বিচারকের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের জেল। সেই জরিমানার টাকা নিহত মন্টুর মাকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ছবি ও তথ্যঃ মায়া সালুই
[uam_ad id=”3726″]