বসন্ত উৎসব মানেই হাজার হাজার বাঙালির ঠিকানা শান্তিনিকেতন। রং আর আবিরে যেন রাঙ্গা হয়ে যায় রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন। সকাল থেকেই যেন উৎসবের চেহারা। বেজে ওঠে সেই চেনা গান- “ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল” অথবা একেবারে শেষ মুহূর্ত -“রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো”।
বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ কখন রঙের খেলা চালু করেছিলেন, তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। কিন্তু শান্তিনিকেতনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ যে বসন্তোৎসব চালু করেছিলেন, তা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। ১৯২৫ সালে প্রথম পথ চলা শুরু হয় এই বসন্ত উৎসবের। উৎসবের মূল সুর যেন তখন থেকেই বেঁধে দেওয়া হয়ে গিয়েছিল।
তখন থেকেই দেশ-বিদেশের নানা অতিথির পাশাপাশি উৎসবে সামিল করা হতো আদিবাসীদেরও। সেই প্রথা আজও চলেছে। শান্তিনিকেতন উৎসবের, আনন্দের পরিচিত মুখ হলেও পৌষ উৎসব পেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই শান্তিনিকেতন অপেক্ষায় থাকে, কখন আসবে বসন্ত উৎসব? কখন আসবে ফাল্গুনের সেই পূর্ণিমা?
সকাল থেকেই শান্তিনিকেতনের রাস্তা রাঙ্গা হয়ে ওঠে আবিরে। বিশ্বভারতী চত্বরই মূলত এই মূল অনুষ্ঠানের অঙ্গ। সেখানে নৃত্যনাট্যের পাশাপাশি চলে নানা উৎসব। আশ্রমের ছাত্রছাত্রীরা তো থাকেনই। তাছাড়াও থাকেন ভিনদেশি ছাত্রছাত্রীরাও। নেচে ওঠে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরাও। এমনকী বিদেশিরাও।
এবার আবহাওয়া কিছুটা প্রতিকূল, গরমের মাত্রা একটু বেশিই। মাঝে মাঝে চারিদিকে পলাশের লাল রং তো আছেই। অন্যান্য বছরের মত এবারও দুই-তিন দিন আগে থেকেই বিভিন্ন হোটেলে ঠাঁই হবে না, হবে না হবে বলেই মনে হয়। অনেকে আগে থেকেই বুকিং করে রেখেছেন। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসন সতর্কই আছে। বিভিন্ন এলাকায় লাগানো হয়েছি বিশেষ নজরদারি ক্যামেরা। বিভিন্ন হোটেলেও চলছে নজরদারি। পর্যটকদের যেন কোনো রকম হয়রানির শিকার না হতে হয়, সে বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক প্রশাসন।