ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা,
মেয়ে হয়ে জন্মেছি বলে শুধু পাই খোঁটা।
যমের দেওয়ালে আমরা দি কাঁটা
আমাদেরই বারণ নতুন পথে হাঁটা।
বাবার আমি সাধের মেয়ে, দু চোখের মনি
আমার অবাধ ঘুরে বেড়ানোই,থাকে মায়ের শাসানি।
বাবাকে মা বলে দেখবে ,মাখাবে চুনকালি,
বাবা মা’কে বলে এক হাতে বাজে না তালি।
বাড়ছে বয়স, বাড়ছে শরীর,বাড়ছে লোকের আড়চোখে দেখা,
মনের পাখি পেয়েছে আকাশ, থাকতে পারে না একা।
বয়ঃসন্ধির এই সময়ে বাড়ালাম ভুল পথে পা,
প্রেম পিরিতের নামে প্রেমিক ,ছুঁয়ে দেখে আমার গা।
মায়ের চোখে দিতে পারি না ফাঁকি,
বুক ভরে শঙ্কায় ,
বাবা যদি জানতে পারে,আছে কী আমার কপালে হায়।
পাড়ার ভাই ,যারে আমি প্রতি বছর দি ভাইফোঁটা,
আমার ভুলে ভরা প্রেমের সাক্ষী সে, সাহায্য করে এটা ওটা।
বলল দিদি ভাবিস না তুই,দেখব আমি সব
পাড়া প্রতিবেশী জানবে না কেউ, হবে না কলরব।
ভাইয়ের সাহসে আমার প্রেমের গাড়ি ছুটল দ্রুত বেগে,
মাঝে মধ্যে ভাইকে দিতাম চকলেট, যাতে না যাই রেগে।
চুটিয়ে আমি করলাম প্রেম ,বছর তিন চার
প্রেমিক আমায় দিয়েছে বলে, দরকার নেই তোমার।
শরীরে আমার প্রেমের ক্ষত,লাল লাল সব দাগ,
ভাইকে আমি দিয়েছি শুনিয়ে ,ছিল যত মনের রাগ।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়ে ,ছাড়লি বাড়ি ঘর,
দিদিকে তুই ভুলে গিয়ে ,করলি আপনকে পর
নেশার ঘোরে কবে যে তুই আসক্ত হলি,
বিড়ি, গাঁজা, মদ যা পেলি তুই সব কিছুই খেলি।
চোখের সামনে দেখতে পেলাম, তোর জীবন হল ছারখার,
হতাশায় নিজেকে শেষ করে, দিলি ভাইফোঁটার উপহার।
আজকে কাকে দেবে ফোঁটা দিদি? খাওয়াবে মিষ্টি হাঁসি মুখে?
এই দিন মনে পড়ে তোকে, অশ্রুধারা আসে চোখে।
কাবু মন্ডল