বীরভূম জেলা বিভিন্ন সতীপীঠকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা শাক্ত ভাবধারার জন্য বিখ্যাত হলেও বীরভূমের সিউড়ী র সন্নিকটে ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে ভান্ডিরবন শাক্ত, শৈব ও বৈষ্ণব ভাবধারার সার্থক সহাবস্থানের এক উজ্জ্বল নিদর্শন।কথিত আছে বৈষ্ণব সাধক ধ্রুব গোস্বামী বৈষ্ণব বলয়ে ফিরে যাওয়ার সময় তাঁর বারোটি গোপাল বিগ্রহের একটি ফিরে যেতে অস্বীকার করে। সেই দারুমুর্তিই আজ ভান্ডিরবনের গোপাল নামে প্রতিষ্ঠিত ও পূজিত হন। অন্যদিকে রাজনগরের রাজার অনাচারে রুষ্ট কুলদেবী কালী কুশকর্নিকা নদীর প্লাবনে ভেসে এসে আশ্রয় নেন ভান্ডিরবন সংলগ্ন খটঙ্গা গ্রামে। সেই কালী মূর্তিই আজ বীর সিংহপুরের কালী নামে বিখ্যাত।
কিন্তু ভান্ডিরবন নামের সাথে জড়িয়ে আছে এক শৈব সাধকের নাম। শোনা যায় বিভান্ডক মুনী গহন অরণ্যে তাঁর ইষ্ট দেবতা শিবের উপাসনা শুরু করেন ও শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন যা বিভাণ্ডেশ্বর নামে পরিচিতি পায়। সেই বিভাণ্ডেশ্বর ই আজ লোকমুখে পরিবর্তিত হয়ে আজকের ভান্ডিরবন হয়েছে।
বর্তমানে এই ভান্ডিরবন কে কেন্দ্র করে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।রাস্তাঘাট, বোটিং, বিনোদন পার্ক সহ একগুচ্ছ পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিউড়ী ১ নং ব্লকের বিডিও মহঃ বদরুদ্দোজা। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য জায়গাটি পিকনিক স্পট হিসেবে যথেষ্টই পরিচিত।কিন্তু এতদিন সেখানে রাত্রি বাসের কোনো ব্যবস্থা ছিলো না।কিন্তু প্রশাসনিক তরফে গৃহিত এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হলে ভান্ডিরবন বীরভূমের পর্যটন মানচিত্রে এক উল্লেখযোগ্য স্থান পাবে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
তথ্য সহায়তা: আনন্দ বাজার পত্রিকা।
ছবি : অংশুমান মাহারা