বীরভূম ১৩ জুলাইঃ- ভোট আসে ভোট যায়। কিন্তু সমস্যার সমাধান সমাধান হয় না তাঁদের। বর্ষা মরশুম এলেই কার্যত রাতের ঘুম চলে যায়। চারিদিকে নদী আর তার মাঝে দ্বীপের মধ্যে কয়েকটি গ্রাম। এই গ্রামেও কেও অসুস্থ হলে সেই রোগীকে বা সন্তান সম্ভবা হলে তাকে হাসপাতালে কিভাবে নিয়ে যাওয়া যাবে সেই দুশ্চিন্তা। স্কুল, কলেজ, অফিস যাওয়া আসা থেকে খাদ্য সামগ্রী রসদ সংগ্রহ কিভাবে হবে, তারও সমস্যা থাকে এই বর্সার মাস গুলিতে। এই সময় তাঁদের এক মাত্র ভরসা নৌকা। যদিও নদীতে জলের পরিমান বৃদ্ধি হলে সেই নৌকাও বন্ধ হয়ে যায়। এলাকা বাসীদের দাবি অবিলম্বে সেতু করে দিয়ে তাঁদের সমস্যার রোজনামচা বন্ধের স্থায়ী ব্যবস্থা করা হোক।
বীরভূমের মহম্মদ বাজার ব্লকের আঙ্গার গড়িয়া এবং ভূতুরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বড়াম, নরসিংহ পুর, খোদাই বাগান, কাটুনিয়া, পাঁচপুকুর,বেহিড়া,ভেজিনা সহ প্রায় গোটা ১৫ টি গ্রাম ময়ূরাক্ষী নদী ও তার শাখা নদী কানার মাঝে দ্বীপের মধ্যে অবস্থিত। ময়ূরাক্ষী নদীটি মোলপুরের কাছে দুই ভাগ হয়েছে, সেটি আবার কাটুনিয়া ও পাঁচপুকুরে গিয়ে মিশে ওই গ্রাম গুলিকে ভৌগলিক ভাবে দ্বীপের মতো করে দিয়েছে। ফলে মূল ভুখন্ডের সঙ্গে এই সময় যোগাযোগ কার্জত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই সময়ে তাঁদের এক মাত্র ভরসা নৌকা। তিনটি নৌকা থাকেলেও বড়াম থেকে মামুদপুর পর্যন্ত নৌকাটি এখন চলাচল করছে। বেহিরা থেকে মোলপুর নৌকাটি ফুটো হয়ে যাওয়াই সেটিতে এখন পারপার বন্ধ। এর একটি নরসিংহপুর থেকে ভুতুরা যেটি বড় নৌকা, নদীতে বেশী জল থাকলে তবেই পারাপার হয়। বর্সা ছাড়া অন্য সময়ে নদীর মাঝে বরাবর রাস্তা করে দিয়ে যাতায়ত করা হয়। এখন সবাই বড়াম গ্রামের নৌকা দিয়ে পারাপার করছেন। আবার অনেকে গুর তৈরী করা কড়াই এ চেপে পারাপার করছেন। সাইকেল থেকে মোটর সাইকেল সব নৌকাতে বা কড়াইএ চাপিয়ে নিয়ে পারাপার করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা রবিলাল মুর্মু, অধীর আচার্জ, করুনা বাগদীরা বলেন, বর্সা এলেই আমাদের ঘুম আমাদের উড়ে যায়। আমাদের ব্যবসা ,অফিস স্কুল, হাসপাতাল সব কিছুই নৌকা পারাপার করে যেতে হয়। নদীতে বেশী জল হলেও সমস্যা নৌকা চলেনা আবার জল কমে গেলেও নৌকা পারাপার হয় না। নেতা থেকে প্রশাসন সবাই আমাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও এখনো পর্যন্ত কিছুই হয়নি। আমাদের দাবি অবিলম্বে একটা সেতু করে দিয়ে আমাদের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ওই এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ আমাদের বিবেচনাধীন। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সেতু করে দিয়ে তাঁদের সমস্যা দূর করতে।
ছবি ও তথ্যঃ কৌশিক সালুই
[uam_ad id=”3726″]