Home » জেলার খবর » রামপুরহাটে জি.এস.টি. র চাপে আত্মঘাতী ব্যবসায়ী

রামপুরহাটে জি.এস.টি. র চাপে আত্মঘাতী ব্যবসায়ী

জিএসটির জেরে ব্যবসা না করতে পরে আত্মঘাতী হলেন এক ব্যবসায়ী। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ব্যবসায়ীর নাম পিনাকী দত্ত (৪৩)।
এদিন মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণপুর গ্রামের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পিনাকী দত্তের একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। দোকান থেকে কিছু দূরে তাঁর বাড়ি। ওই দোকানে পাইকারি সামগ্রী বিক্রি করতেন তিনি। ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন কিছু গ্রামের মানুষ তাঁর কাছ থেকে মুদির জিনিস নিয়ে যেত। কিন্তু, জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকেই তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। কারণ জিএসটি নম্বর না হওয়ায় মহাজনের কাছ থকে জিনিসপত্র পাচ্ছিলেন না তিনি। এদিকে আবার জিনিসপত্র দিতে না পারায় বকেয়া টাকা উঠছিল না গ্রাহকদের কাছে। এনিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন পিনাকীবাবু। প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুপুরে ভাত খেতে বাড়ি ফিরতেন। কিন্তু সোমবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ ভাত খেতে বাড়ি আসছে না দেখে স্ত্রী সূপর্ণ দত্ত দোকানে ডাকতে যান। দেখেন দোকানের সামনের দরজা বন্ধ। এরপর পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে দেখেন স্বামীর মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বের হচ্ছে। স্ত্রীর চিৎকারে ছুটে যান এলাকার মানুষ। তবে ততক্ষণে মৃত্যু হয় পিনাকীবাবুর। খবর দেওয়া হয় রামপুরহাট থানায়। পুলিশ মৃতদেহর পকেট থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করে। সেখানে লেখা রয়েছে, “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি নয়। দায়ি একমাত্র জিএসটি। তাই আমি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলাম।” মৃতের আত্মীয় দিলীপ বড়াল বলেন, “জিএসটি লাগু হওয়ার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন জামাইবাবু। তারপরই আজ আত্মঘাতী হলেন।” অন্যদিকে শুধু জিএসটির কারনে একজন ব্যবসায়ি আত্মঘাতী হতে পারে সেই বিষয়টা এলাকার স্থানীয়রা ঠিক ভাবে মেনে নিতে পারছেন না। অনেকের দাবী মৃতের পকেট থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে সেটা ঠিকই। কিন্তু সেটা অন্য কোনও কারনে কারোর চক্রান্ত নয় তো! এলাকার অন্যান্য আরো ব্যবসায়িদের মুখে আলোচনায় ঘুরে বেড়াচ্ছে জিএসটি নম্বর ছাড়াও এখনও পণ্য লেনদেন করা হচ্ছে। সরকারি ভাবে জিএসটি লাগু হলেও এখনই পদ্ধতিগত ভাবে জিএসটি লাগু হতে সময় লাগছে এই বিষয়টা সবাই জানে। কিন্তু শুধু জিএসটি নম্বর পেলেন না বলেই আত্মঘাতী হতে হল সেই বিষয়টা সকলের হজম হচ্ছে না। যদিও পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক। এদিকে মৃত্যুর ঘটনার পর মৃতের পরিবারের তরফে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয় নি।
ছবি ও তথ্যঃ কৌশিক সালুই
[uam_ad id=”3726″]

Comments